দৌলত হোসেন আবিরঃ চাঁদপুর, ১৮ নভেম্বর: চাঁদপুরের মতলবের ৬ বছর বয়সী বিস্ময় বালক সোহান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যিনি ‘মেসি খ্যাত’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন তার অসাধারণ বল নিয়ন্ত্রণ ও ফুটবলের প্রতি নিদারুণ মনোযোগের কারণে, আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নতুন আশার আলো হয়ে ওঠা এই ক্ষুদে ফুটবলারের ভবিষ্যৎ গড়ার দায়িত্ব নিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তারই ফলশ্রুতিতে, সোহানের পড়াশোনা ও খেলাধুলার পরিবেশ নতুনভাবে সাজানো হয়েছে। ক্রীড়া উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ ও বিকেএসপিতে সুযোগ: সোমবার বিকেলে (১৮ নভেম্বর) এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সাক্ষী হলো সোহান। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার আমন্ত্রণে ঢাকায় তার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন সোহান ও তার বাবা মো. সোহেল। এই সাক্ষাতে সোহান নিজের ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে। সাক্ষাৎ শেষে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “চাঁদপুরের মতলবে বাড়ি, তবে ৫ বছরের সোহানের স্বপ্নটা চাঁদকে ছুঁয়ে দেখার মতোই। সুযোগের অপ্রতুলতা সোহানকে আটকাতে পারেনি, ৫ বছরেই ফুটবল প্রতিভা দেখিয়ে দৃষ্টি কেড়েছেন দেশের মানুষের, নজরে এসেছেন ক্রীড়া উপদেষ্টারও।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের আগে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করে নিজের স্বপ্নের কথা তুলে ধরে ক্ষুদে ফুটবল প্রতিভা সোহান। তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) উন্নত প্রশিক্ষণ ও ভবিষ্যৎ গড়ার সুযোগের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সোহানের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কামনা করে তাকে একটি ফুটবল উপহার দেওয়া হয়। জাতীয় পর্যায় থেকে সমর্থন: গত সোমবার (১০ নভেম্বর) রাত ৯টায় ক্রীড়া উপদেষ্টা তার ফেসবুকে ঘোষণা দেন যে, খুদে ফুটবলার সোহানকে বিকেএসপি স্কলারশিপ দেওয়া হবে। এই ঘোষণা মুহূর্তেই দেশজুড়ে আলোড়ন তোলে এবং সোহানের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদ আরও বাড়িয়ে দেয়। পরিবারের উচ্ছ্বাস ও প্রশাসনের সমর্থন: মতলব উত্তরের পাঁচানী গ্রাম থেকে উঠে আসা ৬ বছরের এই ফুটবল প্রতিভা এখন বিকেএসপিতে যাওয়ার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। সোহানের বাবা মো. সোহেল বলেন, “আমি সোহানকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখি। আল্লাহ যেন সেই স্বপ্ন পূরণ করেন। ক্রীড়া উপদেষ্টার সাথে আজকের সাক্ষাৎ আমাদের জন্য বড় আশীর্বাদ। বিকেএসপিতে সুযোগ পাওয়া আমাদের সন্তানের ভবিষ্যৎ বদলে দেবে।” তিনি সোহানের পাশে দাঁড়ানো সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “আমার ছেলে দেশের মুখ উজ্জ্বল করুক এটাই আমার স্বপ্ন।” মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি মাহমুদা কুলসুম মনির বলেন, “সোহান আমাদের এলাকার গর্ব। বয়স খুব কম হলেও তার ফুটবল নৈপুণ্য সত্যিই বিস্ময়কর। উপজেলা প্রশাসন ও ক্রীড়া সংস্থা সবসময় সোহানের পাশে থাকবে।” রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সহায়তা, প্রশাসনের আগ্রহ এবং পরিবারের অকৃত্রিম সমর্থন—সবকিছু মিলিয়ে সোহানের ভবিষ্যৎ এখন আরও উজ্জ্বল। দেশবাসীর প্রত্যাশা, একদিন জাতীয় দলের জার্সি গায়ে দেশের পতাকা উড়িয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলো ছড়াবে মতলবের এই ক্ষুদে ‘মেসি খ্যাত’ সোহান।